সন্দীপ সম্পর্কে আমি যা জানি / নির্মল হালদার
সন্দীপ সেই ক্যামেরাম্যান যে শুধুমাত্র চিত্রকর সনৎ করের ছবি তোলার জন্য শান্তিনিকেতন ছুটে যায়। কবি দেবদাস আচার্যর ছবি তোলার জন্য কৃষ্ণনগর ছুটে যায়। সে সুদূর ব্যাঙ্গালোর ছুটে গেছে গায়ক মান্না দের ছবি তুলতে। জলপাইগুড়ি ছুটে গেছে কালাচাঁদ দরবেশের ছবির জন্য।
শুধু কবি শিল্পী নয় নাটকের, অভিনেতাদের, সিনেমার অভিনেতাদের ছবি তুলে গেছে দিনের পর দিন। গল্পকার ঔপন্যাসিকদের ছবি তুলে গেছে।
সৈকত রক্ষিতের ছবি তোলার জন্য অপেক্ষা করেছে বছরের পর বছর। শেষ অবধি এই গত শীতে
সৈকত রক্ষিতের ছবি তুলতে পেরেছে।
অর্থের লোভে নয়। খ্যাতির লোভে নয়, শুধুমাত্র ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ছবিগুলো থেকে যাবে। ইতিহাস হয়ে থেকে যাবে।
আমার মনে আছে, আমাকে মডেল করে সে যখন
ছবি তুলে যাচ্ছে, তখন তার ইচ্ছে ছিল, আমার ন্যুড ছবিও তুলবে। আমি আমার সংস্কার থেকে সেই ছবি তুলতে দিইনি। তবে সে বডি পেইন্টিং এর ছবি তুলেছে। এজন্যে কত তোড়জোড়। সারা শরীরে কে ছবি আঁকবে? শিল্পী আশিস নন্দী কে প্রস্তাব দিতেই,
রাজি হয়ে গেল।
আশিস আমার বাড়িতে এসে আমার খালি গায়ে ছবি যেমন আঁকলো তেমনি দুই তরুণ বিশ্বনাথ বাউরী ও বাপি কর্মকারের গায়ে ছবি এঁকে ভরিয়ে তুললো তাদের শরীর।
সেদিন তাদেরও ছবি তুলে সন্দীপ খুশি হয়েছিল খুব। সেদিন অবিনদের গ্রামের কাছে কাঁসাই যাওয়া হয়েছিল দুপুরের পরে। সেখানে সঞ্জীব বাউরী আমার খালিগায়ে ছবি এঁকেছিল। সন্দীপের ক্যামেরায় আমি বন্দি হয়ে গেছি।
ছবি তোলার ব্যাপারে সন্দীপের আবেগ এতটাই যে সে যখন তখন দূরদূরান্ত ছুটে যায় ক্যামেরা নিয়ে।
পুরুলিয়ার নাচনি--শিল্পীদের ছবি সন্দীপের কাছেই সমস্ত আছে। পুরুলিয়ার কোনো লোকশিল্প অনুরাগীর কাছে নেই।
সে ছুটে এসেছে পুরুলিয়াতে টুসু বা মকর পরবের ছবি তুলতে। এই সন্দীপের আচার-আচরণে কোনো অহংকার প্রকাশ পায় না। তার যে ছবির বিষয়ে আবেগ তাকে কুর্নিশ করতেই হয়।
------নির্মল হালদার
-----১৪---৮---২০২১
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন