কবিতা / নির্মল হালদার
১৬৩.
এটুকুই চাই
কখনো পায়ের দিকে চেয়ে থাকবো
কখনো শব্দের দিকে
যেখানে যা আছে থাক
ঘরের কোণে মাকড়সা
দুয়ারে সিঁদুরের দাগ
চৌকাঠে আলপনা
যেমন আছে থাক
আমি শুধু পায়ের দিকে চেয়ে থাকবো
নিত্যনতুন শব্দের দিকে
আগমনের দিকেও
আগমনেই দুলে উঠবে আম পল্লব।
১৬৪.
আষাঢ়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতে
এসে পড়লো শ্রাবণ।
শ্রাবণের সঙ্গেও কথা বলতে হবে।
শুশনি শাক তুলতে হবে।
ভোর হয়েছে কবেই।
ঝিঙে ফুলের হলুদে রোদ পড়েছে।
ধান জমি থেকে আগাছা তুলছে চাষী বউ।
আমাকে যেতে হবে অনেক দূর।
স্নান করতে হবে।
আমার কোনো ছায়া পড়ে থাকবে না।
------৫ শ্রাবণ ১৪২৮
-----২২----৭----২০২১
১৬৫.
একেকটা ঋতুতে একেক রকম গন্ধ আসে।
সেই গন্ধ বিচার করার মতো
আমার ক্ষমতা নেই।
আমি শুধু বলতে পারি, সব গন্ধ ছাপিয়ে
আমার কাছে একটাই গন্ধ, মায়ের মুখের
পান দক্তার গন্ধ।
চিরদিন।
১৬৬.
আমার মায়ের কোনো ঘর ছিল না
অথবা মা নিজেই ছিল একটা ঘর।
আমার কাছে কান্নার এক ঘর
মা থাকতেও আমার মন ছিল নিরাশ্রয়।
----৬ শ্রাবণ ১৪২৮
----২৩---৭---২০২১
১৬৭.
জেঠি--খুড়ির সঙ্গে মায়ের ঝগড়া হলেও
আমার তো আর ঝগড়া ছিল না।
আমি আদর খেয়েছি জেঠি---খুড়ির কাছে।
সন্ধে হলেই গল্প পেয়েছি রাজারাজড়ার।
আর ঘুমিয়ে গেছি বুকের গন্ধে
কোলে কোলে।
১৬৮.
চুন সুপারি খয়ের আছে, দোক্তাও আছে
আর পানের বাটা থেকে উঠে আসছে,
বোঁটা লাগানো সবুজ একটি পান।
পানতো নয় যেন আমার মায়ের মুখ।
অনেক পুরনো গল্প অনেক নতুন।
-----৭ শ্রাবণ ১৪২৮
----২৪----৭----২০২১
১৬৯.
পাখি কখনো মা হয়ে কখনো প্রেমিকা হয়ে
সৌন্দর্য ছড়ায়। পাখি কখনো কেবলই দূরত্ব
সম্পর্ক থেকেও সম্পর্ক নেই।
নৈকট্য নেই।
আমার অন্তর পুড়তে পুড়তে আমি পাখি আঁকতে থাকি।
পাখির ডানাতে লাগাই আমারই তাপ।
পাখি ওড়ে। পাখির ডানায় লাগে আকাশের প্রবাহ।
আমি আর ছুঁতে পারিনা আমার পাখিকে।
দূরত্ব রচনা হয়। দূরত্ব প্রেম হয়।
-----৯ শ্রাবণ ১৪২৮
----২৬---৭---২০২১
-----নির্মল হালদার

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন