শুক্রবার, ২৭ মে, ২০২২

সমীরের বন্ধুত্ব। সমীর আইচের চিত্রকলা।



সমীরের বন্ধুত্ব। সমীর আইচের চিত্রকলা।
-----------------------------------------------

নদী থেকে নদীতে যেতে হয়।

একটা নদী থেকে আরেকটা নদীর
রূপ সব সময় আলাদা। তার চলন
সব সময় আলাদা।

জীবন থেকে আরেক জীবনের কাছে যাওয়া। বৈচিত্রের কাছে যাওয়া। শিল্পের ক্ষেত্রেও একই কথা। কবিতা থেকে সংগীত। নাটক থেকে ফিল্ম। এবং চিত্রকলা।

শিল্পের সঙ্গে শিল্পের বিনিময়।

সমীর আইচ কিংবা আমাদের বন্ধু সমীর চিত্রকলায় অনেক উঁচুতে থাকলেও সে রবীন্দ্র সংগীত করে।
নিয়মিত তালিম নিয়ে থাকে স্বপন সাহার কাছে।

সমীর অমর পালের কাছেও
ন্যাড়া বেঁধেছিল এক সময়। এই
সমীরের সঙ্গে আলাপ কালীদার
মাধ্যমে।

কালীদার কাছ থেকে পেয়েছি
শিল্পের সমস্ত শাখায় যাতায়াত।
কালীদা বলেন----শিল্প থেকে
শিল্পের বিনিময়।

সেই তখন কালীদার অফিস ছুটির পর কলকাতার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত  কালীদার সঙ্গে। তো
একটা দিন চিত্রকর সমীর আইচের কাছে।

প্রথম দেখেই মনে হয়েছিল,
সমীরের রঙ ও রেখার মতো
সমীরের চেহারা সাহসী ও জোরালো।

পান ভোজনের পর সমীর কোলের কাছে টেনে আনলো
হারমোনিয়াম। শুরু হয়ে গেল
সমীরের কন্ঠে একটার পর একটা লোকসংগীত। তার কাছ থেকে পেলাম মাটির গন্ধ। আগাগোড়া
নাগরিক জীবন যাপন করেও সমীর মাটির কাছেই থাকে।
আলাপের প্রথম দিনই টের পেয়েছিলাম।

সমীর সবসময় দুরন্ত এক যুবক।
তার বয়স বাড়ে না। সে কাজেকর্মেও সব সময় নতুন।
সে তার শিল্পসৃষ্টির জায়গাতেও
বিচিত্রমুখী। তার ছবিও ঋজু।

সে ভাঙতে ভাঙতে এগিয়ে যায়।
নব নব সৃষ্টির দিকে। নিজস্ব স্বকীয়তা রেখে।

সমীরের বিশ্বাস নেই দৃষ্টিনন্দন ছবিতে। বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করে প্রমাণ করেছে সে------সে
অনেক দূরের ঘোড়া।  আর তাই
রাস্তায় রাস্তায় ধুলো উড়লেও ঝাপসা হয়ে যায় না তার মুখ।
আড়াল হয়ে যায় না তার চিত্রকলা।

সে সবসময় পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বিশ্বাসী। এবং বন্ধুত্বেও বিশ্বাসী বলে, আমাকে রাত ১১ টার পরে ফোন করে।

দিনের পর দিন কোনো যোগাযোগ নেই তারপর একদিন ফোন ---------
সমীরের কন্ঠে উষ্ণতা। আন্তরিকতা।

কোনো অনুযোগ নেই। অভিযোগ নেই। তখন স্পষ্ট হয়ে যায়, তার ভালোবাসাতে কোনো খাদ নেই।

তার ছবির ক্ষেত্রেও বলতে পারি,
কোনো ভান-ভনিতা নেই। একথা
আমাদের আরেক বন্ধু যে চিত্রকলা বিষয়ে কাগজপত্রে লেখালেখি করে, সেই দেবাশিস চন্দেরও একই বক্তব্য।

সমীর পুরুলিয়াতে এসেছে।
সৃজন উৎসবে। আশিস নন্দীর
ছবির প্রদর্শনীতে।
তার  সঙ্গে আড্ডা মানে গান কবিতা ছবি। সে তো আজকাল
গানও লিখছে। সুর করছে নিজেই। কবিতাও লেখে। এ সমীরের পক্ষেই সম্ভব।

শিল্প থেকে শিল্পে যাতায়াত করতে করতে সে একটুও টলে যায় না। দৃঢ় চরিত্রের মস্ত উদাহরণ চিত্রকর সমীর আইচ।

শিল্পের অনেক বিষয়ে আমার দৃষ্টি খুলে দিয়েছেন কালীদা। তাঁর সঙ্গে নানান গ্যালারিতে ছবির প্রদর্শনী দেখতে গেছি। তাঁর মাধ্যমেই  সুবিনয় রায়ের রবীন্দ্র সংগীতের অনুষ্ঠান। আর এই সমীরকে কাছে পেয়েছি কালীদার জন্যেই।

বন্ধুদের কাছ থেকেই বুক ভরে
শ্বাস নিতে নিতে আমি হয়ে উঠেছি," বন্ধুজীবী "।

সমীর ও আমার বন্ধুতার পথে পথে কৃষ্ণচূড়া রাধাচূড়া না- ফুটলেও আমরা দুজন ছাতিম ফুলের গন্ধে হেঁটে যাই।

আকাশটা সমীরের চিত্রপট।

আমিও আকাশে আকাশে আমার অক্ষর খুঁজি।



-------১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯
-------২৭-----৫----২০২২
------নির্মল হালদার









ছবি : সন্দীপ কুমার ও ঋতম হাজরা
-------------------------------------------------------------------


সমীর আইচের চিত্রকলা





























কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কবি নির্মল হালদারের বিভিন্ন সময়ের ছবি

পড়ুন "ঘর গেরস্থের শিল্প"

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ