আমার কবিতা : কাঠবিড়ালির লাফ--৫
-----------------------------------------------------
আমি ছন্দ জানি। আমি ছন্দ ভাঙতে জানি। আমি দীর্ঘ কবিতা লিখতে পারি। আমি ছোট কবিতাও লিখতে পারি-------
এরকম আস্ফালনের জায়গা যে নয়। ক্ষমতা দেখানোর জায়গা যে নয় কবিতা। কবিতা, হৃদয় থেকে
যা আসবে। অনুভব থেকে যা আসবে। অভিজ্ঞতা থেকে যা আসবে। সেই আমার কবিতা।
কবিতা ধ্যানের জায়গা।
এককের জায়গা।
কবিতা যন্ত্রণার জায়গা।
প্রেম ও বিরহের জায়গা।
এবং আমার চারপাশের সময়,
জনপদ, মানুষের পায়ের শব্দ
আমার শিল্প। তার সঙ্গে সঙ্গে আমার গড়ে ওঠা।
কবিতা কোনো পাণ্ডিত্যের জায়গা নয়। কবিতা শোনার জায়গা। ঝিঁঝি পোকা ডাকলে কান পেতে শুনতে হয়। পাখি ডাকলে কান পেতে শুনতে হয়। এবং শুনতে গেলে, পন্ডিত হতে হয় না। অন্তরকে প্রসারিত করলেই শোনা যাবে ধান পেকে ওঠার শব্দ।
একটা কাঠবিড়ালি এক ডাল থেকে আরেক ডালে লাফিয়ে
ক্ষমতা দেখায় না।
কবিতা কোনো ক্ষমতা দেখানোর
জায়গা নয়। কবিও কাঠবিড়ালি।
পাতার আড়ালে থাকা কাঁচা পাকা ফলকেও চেনে।
একটি পাথর জলের ঘর্ষণে ঘর্ষণে
নুড়ি পাথর হয়ে গেছে, কবি লক্ষ্য করবেই।কবির দৃষ্টি যে নদীর পাথরে পাথরে জড়িয়ে থাকা শ্যাওলার দিকেও।
কখনো কখনো ভয় থেকে মাছেরা
চুপ করে বসে থাকে ওই শ্যাওলা জড়ানো পাথরে।
কবি দেখবে বৈকি।
চাষিরা চাষ করে আনন্দে-----তাদের পায়ে পায়ে
জল কাদা মাটি। তাদের পায়ে পায়ে ফাটল।
কখনো কখনো কোথাও মাটিতেও
ফাটল ধরে। তার পাশেই জেগে থাকে উইঢিবি। ইঁদুরের বাসা। সাপের গর্ত।
তার একটু দূরে ঘাসের সবুজ।
ফড়িং এসে ঘুরে বেড়ায়। খুদে খুদে পোকারাও বিন বিন করে।
প্রাণের স্পন্দন।
যে কেউ এই স্পন্দন থেকে খুঁজে পাবে উৎসাহ। উজ্জীবন। আলো অন্ধকারের মায়া।
সহজ কথা ঠিক ততটা সহজ নয়,
তারপরও ভাবতে হবে, কী ভাবে সহজ হয়ে আসবে কবিতা-------
আমি তো পড়েছি আমি আরো পড়তে চাই-----
দোল দোল দুলুনি
রাঙা মাথায় চিরুনি।
----১৪ কার্তিক ১৪২৯
----১--১১--২০২২
-----নির্মল হালদার
আরও পড়ুন

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন