আমার কবিতা : কাঠবিড়ালির লাফ--৪
-----------------------------------------------------
আমার সঙ্গে কথামৃত ও গীতবিতান ছিল হাসপাতালে।
একবার।
আমাকে ভরসা ও সাহস দিয়েছিল। আমাকে শুশ্রষা দিয়েছিল। আমি উঠে দাঁড়িয়ে ছিলাম। যেভাবে দাঁড়িয়ে থাকে
একটা তালগাছ। যেভাবে আমার স্মৃতি আমাকে নাড়িয়ে দিয়ে আমাকে শোনায়:
এক পায়ে দাঁড়িয়ে
সব গাছ ছাড়িয়ে-----
যেভাবে আমি আমার স্মৃতি থেকে
আজও খুঁজে পাই, আমাদের ছোট নদী। তারপরেই, ওই যে গাঁ-টি যাচ্ছে দেখা------
সরল সোজা ও সহজ কবিতা গুলি আমার কাছ থেকে হারিয়ে যায়নি আজও। এই কবিতাগুলি যদি কাব্য সমালোচকরা, বাতিল করে দিলেও আমার মতো পাঠকের কাছে থাকবেই। আমি যে এই কবিতার কাছেই নিবেদিত।
আমি যে, কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ির সঙ্গে আজীবন সম্পর্কিত হয়ে আছি। আমি যে দেখতে পাই,
বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই-----
শোলোক বলার কাজলা দিদিরাও আছে আমাদের গ্রামে গঞ্জে। এবং তারাই যে এক একটি কবিতা, মহা জীবনের কবিতা আমি মনে রাখি।
তত্ত্বকথা থাকবে। আধুনিকতা উত্তর আধুনিকতার তর্ক চলবে,
ধারাবাহিক। আরো কোনো নতুন
তত্ত্ব, নতুন তর্ক এসে দাঁড়াবে বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে। তারপরও থাকবে, সহজ পাঠের মত বই। কারো কারো কাছে। মনেও থাকবে: আজ মঙ্গলবার।
পাড়ার জঙ্গল সাফ করবার দিন।
পুরনো হয়নি। জীর্ণ হয়ে যায়নি
এই পংক্তি। বরং আমাদের সমাজ
জীর্ণ হয়ে গেছে।
পাড়ার জঙ্গল সাফ করতে এগিয়ে আসে না কেউ।
শিল্প সাহিত্যেও ধুলো জমছে। সাফ করার মত কে আছে? কেবল বইয়ের পরে বই পাহাড় হয়ে উঠছে।
কোন্ বইটা আমার বই আমি নির্বাচন করতে এগিয়ে যেতে পারি না। কোথায় দাঁড়াবো কার কাছে দাঁড়াবো?
অঞ্জনা--নদী --তীরে চন্দনী গাঁয়ে
প্রদীপ জ্বলছে। হ্যারিকেন ও লম্ফ
জ্বালানোর মতো কেরোসিন নেই।
কবি তো অনেক। মানুষ কই?
----১৪ কার্তিক ১৪২৯
----১---১১---২০২২
----নির্মল হালদার
আরও পড়ুন

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন