মুখোশ / নির্মল হালদার
চড়িদা মুখোশের গ্রাম হিসেবে পরিচিত। পর্যটকরা বাঘমুন্ডি অযোধ্যা ঘুরতে এসে চড়িদা ঘুরে যায় একবার। ছো--নাচের মুখোশ ঘর সাজানোর জন্য কিনেও নিয়ে যায়।
রোরো ফটোগ্রাফার। সে সারাবছরই প্রায় ছবি তুলে বেড়ায়। ইতিমধ্যে সে অনেক পুরস্কার পেয়েছে। বিদেশেও তার ছবি সমাদৃত।
অযোধ্যা রোরোর প্রিয় জায়গা। সে মাঝেমধ্যেই ছবি তুলতে চলে আসে। এবার সঙ্গী হিসেবে নিয়ে এসেছে ডোডোকে। ডোডো ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসে।ফটোগ্রাফির কিছুই বোঝেনা। সে শুধু দেখে পাহাড়ের দাঁড়িয়ে থাকা। ঝরনার নাচ। জঙ্গলের শোভা। মানুষের স্রোত।
রোরো খুঁজে বেড়ায় ছবির জন্য নতুন নতুন বিষয়। সে বলে, মুখোশতো আছে অনেক। দুর্গার মুখোশ। লক্ষ্মী-সরস্বতীর মুখোশ। অসুরের মুখোশ। সিংহের মুখোশ। চড়িদা থেকে বিক্রি হয় দেদার। ছো---নাচের দলগুলি নিয়ে যায়।
আজ কিন্তু রোরো দেখছে, কোনো দোকানে কোনো দুর্গার মুখোশ নেই। গণেশ কার্তিকের মুখোশ নেই। লক্ষ্মী-সরস্বতীর মুখোশ নেই। সিংহ ও অসুরের মুখোশ নেই। কেবলমাত্র মানুষের মুখোশ।
ছো---নাচের দল গুলি ফরমায়েশ করে গেছে। ইদানিং পুরাণের কদর নেই। তাই , সমাজ-সংসারের জটিলতা নিয়ে নাচের দলগুলি পালা তৈরি করেছে। রোরো ভাবছে, মানুষের মুখোশ তৈরি করার কী দরকার? মানুষ তো মুখোশ পরেই আছে। ডোডো চড়িদায় এসে একটা গনেশের মুখোশ কেনার জন্য ভেবেও কিনতে পাচ্ছেনা। কারণ,কোনো গণেশ কার্তিক নেই। সে বিরক্তির সঙ্গে বলে উঠলো-------ধ্যাৎ।এখানে ফালতু এসেছি। মানুষের মুখোশ নিয়ে কি হবে।
সে একটা দোকানে গিয়ে বলে------ দাদা , আমি আমার মাথাটা নামিয়ে যাচ্ছি। এইটে আমার মুখ ও মুখোশ। আপনারা বিক্রি করে দেবেন। আমি আমার
মাথা ছাড়াই মুখ ছাড়াই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
দোকানদার ডোডোর দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে।
-----২৪আষাঢ়১৪২৮
-----৯----৭----২০২১
----নির্মল হালদার

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন