পলাশের রঙ ম্লান হয়ে গেছে।
ফুরিয়ে গেল বসন্তের দিন।
নিষ্পত্র গাছের ডালে নতুন পাতা এসে আহ্বান জানাবে আমাদের।
তার আগে, বাবার কাঁধে এক ছেলে। আরেক ছেলে হাঁটছে।
কোথায় যাবে?
গাজনের মেলা দেখতে যাবে
কুটুমের গাঁয়ে?
কুটুম থাকে অনেক দূর?
রাস্তা অনেক?
তাই মেলার দু চারদিন আগেই
রাস্তায় রাস্তায়?
চৈত্র দিনের রুক্ষতায় ছেলে দুটির
জল তেষ্টা পেলে?
সামনে কোনো জলাশয় আছে?
কুয়ো আছে?
টিউ কল আছে?
জল দাও জল দাও
চিৎকার উঠলে কে এগিয়ে আসবে?
বাবার মুখ সামনের দিকে। তবুও
স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে তার বিচলিত মুখ। যদি জলের সঙ্গে দেখা না হয়?
আশপাশে, সামনে পিছনে
কোনো নদী নেই।
গাছের শিকড় মাটির গভীর থেকে উঠে এসে নিজেকে নিংড়ে জল দেবে ছেলে দুটিকে?
আকাশ শুষ্ক হয়ে আছে।
ঝাঁ ঝাঁ করছে রোদ।
পাখিরাও চলে গেছে জলের সন্ধানে।
গাজনের মেলায় বাবা অবশ্যই
তার দুই ছেলেকে জিলিপি খাওয়াবে। মিঠাই খাওয়াবে।
তখন জলের অভাব হবে না।
মানুষের অভাব হবে না।
মেলায় তো মানুষ আর মানুষ।
এখন পথঘাট শুনশান করছে।
বাবার কাঁধে ছেলে চুপচাপ।
হেঁটে যাওয়া ছেলেটিও চুপচাপ।
চৈত্রের ডালে দু-একটি কচি পাতা
চেয়ে আছে বাবা ও তার ছেলেদের দিকে।
দূরে কোথাও গাজনের বাজনা
বাজছে।
-------২৭ চৈত্র ১৪২৮
------১১----৪----২০২২
------নির্মল হালদার
ছবি : অসিত মাহাত
আরও পড়ুন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন