বাবার হাতে ক্যামেরা দেখে ছেলের ঝোঁক-----তারও ক্যামেরা চাই।
ক্যামেরা যেন খেলার সামগ্রী।
ক্যামেরা না পেলে কেঁদে ওঠে ছেলে। ৭ বছরের ছেলের কাছে তাই ক্যামেরা হয়ে উঠল পুতুল।
খেলার পুতুল।
বাবা পলাশ ঘোষ আলোকচিত্রশিল্পী। ক্যামেরা নিয়ে হাটে ঘাটে গ্রামেগঞ্জে ঘুরে বেড়ান।
সঙ্গে ছেলেও যাবে।
বাবার কাছে ছেলের বায়না, সে দেখবে ক্যামেরা নিয়ে বাবা কি করেন। তার কাছে তো ক্যামেরা
খেলনা বৈ কিছু নয়।
কিন্তু ছেলে দেখতে পেলো, বাবার ক্যামেরায় ছবি আসছে।
ঘরবাড়ি গাছপালা নদী পুকুর পাহাড় মানুষ সমস্তই আসছে।
এওতো এক খেলা।
ছেলে আদিত্য। আদিত্য রঞ্জন ঘোষ সেই ছোট থেকেই ক্যামেরার নেশায়।
এবং তার ক্যামেরায় স্থির হয়ে পড়ে চলমান জীবনযাত্রা।
পুরুলিয়ার ভূপ্রকৃতি। তার বৈচিত্র্য। তার পরব---পার্বণ।
মানুষের "রিঝ"। সঙ্গে ধরা পড়ে
পুরুলিয়ার মাটি। রুক্ষতা।
এক ফসলি জমির চরিত্র।
এখানে এই ছবিগুলিতে পুরুলিয়ার পালা পার্বণ এবং পালা-পার্বণের রঙ। সাধারণ মানুষের উল্লাস ধরা পড়েছে।
আদিত্য যেন বলতে চায়-----
"সবকিছুতেই খেলনা হয়"।
যে খেলনাগুলি জীবনের অঙ্গ।
কান্না হাসির মতই জীবনের সঙ্গে।
ক্যামেরা নিয়ে খেলতে খেলতে
তার ক্যামেরা কথা বলে। নিঃশব্দ।
নিঃশব্দ--নীরব ভাষার সঙ্গে থাকতে থাকতে আদিত্য পনেরো বছরে এসে দাঁড়ালো।
আমি তার খেলার সঙ্গী হতে চেয়ে
বন্ধুতা করেছি তার ছবির সঙ্গে।
বন্ধুতা করতে পারবো?
সাপ যেমন পদ্মফুলকে জড়িয়ে
খেলা করতে চাইলেও খেলা করতে পারে না। কেবল পদ্মের ডাঁটি ধরে ধরে ঘুমিয়ে যায়।
আমিও আদিত্যর ছবির কাছে
তার ছবির আবেশে ঘুমিয়ে পড়ছি।
আমার এই ঘুম আসলে এক জাগরণ।
আমি শান্ত হয়ে একা একা
আদিত্যর শাদা কালো ও
রঙিন ছবির সঙ্গে থাকতে চেয়ে
আদিত্যকে দিলাম প্রতিদিনের আকাশ।
মাটিতো পেয়েছে সে।
ক্যামেরা তার কাছে যেমন পুতুল
তেমনি মাটিও। যে মাটি থেকে
সে সৃষ্টি করে অসংখ্য পুতুল।
নড়াচড়া করে পুতুল।
চুপচাপ থাকে পুতুল।
জেগেও ওঠে পুতুল।
আমি আদিত্যর পুতুলের গলায়
পরিয়ে দিলাম রামধনুর মালা।
-------২০ চৈত্র ১৪২৮
------৪-----৪----২০২২
-------নির্মল হালদার
আরও পড়ুন






















কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন