শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০২২

বসন্ত উৎসব//



গাছে গাছে পলাশ ফুটেছে।
তার রঙ ছড়িয়ে পড়ছে মাটিতে।
অশোক ফুলের রঙে রঙেও
সেজে উঠছে চরাচর।
কল্কে ফুলের হলুদে মুখ রাখে
শালিক চড়ুই।
কাক এসে পলাশ ফুলের মধু
খুঁটে খুঁটে যায়।

আড়াল থেকে কোকিলের ডাক।

সাড়া দিয়ে গাছপালা পুলকিত হয়ে ওঠে।

ঝোপঝাড়েও মৌমাছিরা গুনগুন করে। দিকে দিকে প্রজাপতি ওড়ায় রঙিন উত্তরীয়।

মৈত্রেয়ী মনে মনে সুর খুঁজে যায়।

সে পলাশ ফুলের মালা পরবে না।
সে নাচ করবে না বসন্ত উৎসবে।

সঙ্গীত ভবনের ছাত্রী হলেও সে
চলে যাবে জঙ্গলের দিকে।

জঙ্গলটা ছোট হলেও অনেক পলাশ গাছ। মহুয়াও আছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে কাটিয়ে দেবে একটা দিন।

মৈত্রেয়ী আরেকটা কথাও বলে,
বসন্ত উৎসব তো নিজের মনে। এজন্য নাচগানের প্রয়োজন পড়ে না। বসন্ত উৎসব তো প্রকৃতির মধ্যে। তা শুধু চেয়ে দেখতে হয়।

আজ দোল পূর্ণিমা।

মৈত্রেয়ী সকলের জেগে ওঠার আগেই উঠে পড়েছে। তার ঝোলাতে পাউরুটি আর মিষ্টি।
আর কয়েকটা লজেন্স । বিস্কুটের প্যাকেট ও আছে।

সে একা একা হেটে যায়।

দু একটা পাখি ডেকে উঠছে। 

আকাশে ঊষার কিরণ।


যেন বা তার গায়ে আবির ছড়িয়ে
আহ্বান করলো নিজের কাছে।

জঙ্গলের কাছাকাছি গিয়ে মৈত্রেয়ী দেখতে পায় গাছে উঠে
আশ্রমের কয়েকজন , তার মধ্যে তারও পরিচিত দু'একজন, পলাশফুল পাড়ছে।
তার রাগ হলো। সে ক্ষোভের সঙ্গে
বলে উঠলো----উৎসব কি শুধু
আশ্রমেই ? বনে জঙ্গলে, রাস্তাঘাটে উৎসব হবে না? গাছগুলো ন্যাড়া হয়ে গেলে তোদের কি ভালো লাগবে?

তার চোখে পড়ল আরো, একটি মেয়ে গাছ তলায় বসে মালা গাঁথছে।
মৈত্রেয়ী রাগে-দুঃখে -অভিমানে
মেয়েটির কাছ থেকে অর্ধ সমাপ্ত
মালাটি নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে।

দূর থেকে ভেসে আসে---------

রাঙা হাসি রাশি রাশি অশোকে পলাশে------


-----১৪ চৈত্র ১৪২৮
-----২৯----৩----২০২২
------নির্মল হালদার






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কবি নির্মল হালদারের বিভিন্ন সময়ের ছবি

পড়ুন "ঘর গেরস্থের শিল্প"

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ