শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০২২

সম্পর্ক এক জ্যান্ত বিষয়



সম্পর্ক এক জ্যান্ত বিষয়
-------------------------------

রাস্তা তো অনেক। কোনো কোনো রাস্তা চলে যায় পর্ণার দিকে। পর্ণাও রাস্তার সঙ্গে বন্ধুতা করে ভ্রমণে যায়।

কখনো পাহাড় কখনো সমুদ্র কখনো জঙ্গলে গিয়ে পশু পাখির পায়ের ছাপ সংগ্রহ করে।

যে শিশির ধুলায় জমেছে, সেও তো এক কাব্য। পর্ণা কুড়াতে
কুড়াতে পাহাড় নদী জঙ্গলের আরেক প্রাণ হয়ে ওঠে।

প্রেম হয়ে ওঠে।

পর্ণাও এক প্রেম।

বহতা।

সেও তো হাতিবাগানের একটি ফুলের গাছ।হাতির দল গন্ধ নিয়ে সুগন্ধ নিয়ে সঞ্জীবকে ডাকে। সঞ্জীবের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক।

সম্পর্ক একটি জ্যান্ত বিষয়।

সম্পর্ক থেকেই আমারও যাওয়া পর্ণার কাছে। এক বর্ষায় হাঁটু জল নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম।

চা চাই চা------।

আজও চা চাইছি অনেক দূর থেকে। তৃষ্ণাকে কঠিন করতে সহজ করতে আজ ও চাইছি----ডাইনিং টেবিলে যাই।

গল্প করি।

আমার ছোটবেলার রান্নাঘরে পিঁড়ি ছিল।কোনো আত্মীয় এলে মা ও বৌদির সঙ্গে গল্প করতে পিঁড়ি টেনে বসে পড়তো।

আমি একটা চেয়ার টেনে পর্ণার পাশে।অনেক কথা জমে আছে।
পরিকল্পনাও আছে।

কাঁসাই পারে আমার একটা নৌকা আছে। নৌকা নিয়ে কাঁসাইয়ের বালিতে  রুখু হাওয়ায় ঘুরে বেড়াবো।

কোনো ছবি ওয়ালা এসে রঙে রঙে  পর্ণাকে ডুবিয়ে পর্ণাকেই ক্যানভাসে লটকে দেবে।

সেই ছবিওয়ালা কই?

পর্ণা নিজেও ছবিওয়ালাকে রঙে রঙে ডুবিয়ে ক্যানভাসে লটকে দিতে পারে।

সেই পর্ণা আছে এখনও।

শান্তিনিকেতন। উত্তরবঙ্গ। দক্ষিণের কোনো সমুদ্রের ধারে।
পাহাড় কোলের ঘরেও আছে।

আছে কবি কালীকৃষ্ণ গুহর সঙ্গে। গল্পকার স্বপন চক্রবর্তীর সঙ্গে। আছে কবি অতনু ভট্টাচার্যের সঙ্গে।

নিজের সঙ্গে তো আছেই স্বপ্ন বুনতে বুনতে।

স্বপ্ন বুনতে বুনতে বুবকা ও রূপকথা। স্বপ্ন বুনতে বুনতে কবিতার পরে কবিতা।

পর্ণার কাছ থেকে উপহার পেয়েছিলাম একটা সোয়েটার।
এক দীর্ঘতম উষ্ণতার সঙ্গে আমি ছিলাম।

আজও আছি। কেবল সেই সময়টা নেই।

বেলা আছে না ডুবছে কখনো কখনো স্পষ্ট লাগেনা। চারদিক ঘুমিয়ে পড়ছে যেন। কথা বলার কেউ নেই।

কথা। অনেক কথা। বলা হলো না আমার। পর্ণা বলতে পেরেছে? কার সঙ্গে কোথায়?

রাত জাগা তারাও কী বলতে পেরেছে সব কথা বলতে? 
এক একটা দুপুরও দীর্ঘ হয়ে কথা বলতে চায়। যে দুপুরে আচার শুকোয়। বিউলির ডালের বড়ি শুকোয়।

কাক এসে ছাদের কার্নিশে।

পর্ণাদের পুরনো আমলের বাড়ি।
আভিজাত্য বহন করছে  । দেয়ালে দরজায়  প্রাচীন এক গন্ধ পেঁচার কাছে নিয়ে যায়।

পেঁচারাই তো মা ঠাকুমা, খুড়ি জেঠি, জ্যাঠা কাকা, পিসি মাসিদের না বলা কথা আমাকে বলবে।

আমিও যে বন্ধু এক।

বন্ধু হওয়া সহজ নয়। অনেক জটিলতা ডিঙিয়ে ডিঙিয়ে একটা জায়গায় থেমে যেতে হয়।

আমরা অনেকেই থামতে জানি না।

আমাদের দুঃখ থেকেই পর্ণার তুলি প্রজাপতি রঙের ফোয়ারা।

আমরা না আমি ভিজে উঠবো?

আমিও যে চিৎকার করে বলছি, আমি বাঁচতে চাই।

বর্ষা এসেছে। ধানের বীজ ফেলছে
চাষিরা। মেঘের অন্ধকারে কোমর বেঁধে
পর্ণাও বীজ ফেলছে জমিতে।

কলম থেকে কালি ঢালছে জমিতে।  

ধান আসবে। নতুন কথার আলোতে দেখতে পাবো ধানের 
শীষ ছুঁয়ে ফেলছে আকাশ।

আকাশ ও আশীর্বাদ ঢালছে পর্ণার মাথায়।
এক পা এক পা করে সে যাবে পশুপাখিদের কাছে।

অনেক দিনের অনেক প্রাণ একসঙ্গে গেয়ে উঠবে------
আকাশ আমায় ভরলো আলোয়
আকাশ আমি ভরবো গানে------


------১৬ আষাঢ় ১৪২৯ রথযাত্রা
------১----৭----২০২২
------নির্মল হালদার

















পর্ণা দাশগুপ্ত মিত্রর কবিতার বই ও চিত্রকর্ম

১: উতলা নদীতে স্নান

২:সুখলতা

--------------
স্মৃতিকথা
--------------
ভাসানো মেঘের ভেলা











কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কবি নির্মল হালদারের বিভিন্ন সময়ের ছবি

পড়ুন "ঘর গেরস্থের শিল্প"

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ