সোমবার, ২০ জুন, ২০২২

সোনার কৌটো রূপোর কৌটোয় ভ্রমর ভ্রমরা

সোনার কৌটো রূপোর কৌটোয় ভ্রমর ভ্রমরা
------------------------------------------------------


ওরা স্বপ্ন বিক্রি করবে।

অপেক্ষা করছে কে আসবে কারা আসবে স্বপ্ন কিনতে।

আজ এই মাঠে শুধু স্বপ্ন আর স্বপ্ন। স্বপ্ন বিক্রি।  

মন্ডা মিঠাই নেই। ভাবরা পোকড়ি নেই।চা--চপ নেই। শুধু রঙিন স্বপ্ন।

মেলা স্বপ্ন। কয়েক ঘন্টা মাত্র।

ছোটদের কাছে স্বপ্ন বিক্রি।

স্বপ্নেরা উড়বে। রঙিণ স্বপ্নেরা উড়বে। আমি সেই স্বপ্নের পিছু পিছু গিয়ে পাখিদের সঙ্গে কথা বলবো।তারা বলবে, স্বপ্ন বলে কিছু নেই শুধু আকাশ। তারা বলবে, স্বপ্ন বলে কিছু নেই শুধু হাওয়া। 

ওরা শুনবেনা কিছুই ওরা বিক্রি করবে স্বপ্ন।

মেলা মানুষের কাছে মেলা স্বপ্ন।

আমার স্বপ্নেরা শাদা--কালো‌। আমার স্বপ্নেরা হোঁচট খেতে খেতে রক্তাক্ত হয়ে ওঠে।
 ভয়ে অস্থির হয়। কেঁপে ওঠে।

আর শিশুদের হাতে স্বপ্ন ধরিয়ে দিলে? স্বপ্নেরা উড়বে। উড়ে উড়ে কোথায় যাবে? কতদূর যাবে?

স্বপ্ন যদি দিগন্তের কাছে নেমে যায়? তুমি থাকবে তো দিগন্তিকা?
আমার কোনো কোনো বন্ধু আবেগে থাকে। সব সময়। আর আবেগই হলো স্বপ্নের আঁতুড়ঘর।

ঘাসের মূল থেকে স্বপ্ন টেনে টেনে আমার বন্ধুরা চিবোতে থাকে। তাল--খেজুরের শুকনো হাঁড়িতেও আবেগ খুঁজে পায়।

আমার বন্ধুরা রঙিন বেলুন ক্রয় না করেও বেলুনের দিকে চেয়ে থাকে।
আমার বন্ধুরা বলেও ,বেলুন নাও। বেলুন নাও। বেলুনওয়ালার দুপয়সা হোক।

স্বপন চক্রবর্ত্তী পকেট থেকে একগাদা পয়সা বের করে, বেলুন কিনে কিনে ছোটদের হাতে ধরিয়ে দেন। লজেন্সও ধরিয়ে দেন।

স্বপনের অভ্যেস যেখানেই যাবেন লজেন্স নিয়ে যাবেন। এবং শিশুদের দেখতে পেলেই, হাতে হাতে লজেন্স।

এও একরকমের স্বপ্ন বিলি করা।

আমি স্বপনকে অনুসরণ করার চেষ্টা করেও পারিনি। কারণটা মনে হয়, আমার হাতে স্বপ্ন নেই।

সত্যি কি নেই?

আমার হাতের রেখা যে সমুদ্রের দিকে গিয়ে ভাসাতে থাকে ময়ূরপঙ্খী নাউ।

রাজপুত্র রাজকন্যা থাকে।

রূপোর কৌটো সোনার কৌটোতে থাকে ভ্রমর ভ্রমরা।

বাপি বলছিল একদিন , ভ্রমর উড়িয়ে ভ্রমরের সঙ্গে সে চলে যাবে অচিনপুরে।

বাপিকে আপনারা চেনেন না।
সে সব সময় তেজপাতার গন্ধ মেখে ঘুরে বেড়ায়। আর আমি তেজপাতার মতো একটি মেয়ের স্বপ্ন দেখতে দেখতে এই মেলাতে।

এই মেলাতে রঙিন বেলুন বিক্রি হচ্ছে। পালকের জন্য বেলুন নিতেই হবে। সে ভীষণভাবে  বেলুন বিলাসী।

তার ছোট ছোট ফুঁয়ে বেলুন ফুলে উঠলেই তার খুশি চাঁদ-তারা হয়ে ওঠে। ঘুম থেকে ওঠে  ঘুমন্ত পাহাড়।

মানুষও।


-------৪ আষাঢ় ১৪২৯
------১৯----৬----২০২২
------নির্মল হালদার













ছবি : অভিজিৎ মাজী











কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কবি নির্মল হালদারের বিভিন্ন সময়ের ছবি

পড়ুন "ঘর গেরস্থের শিল্প"

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ