মাছের জাল
-----------------
নদীর ধারে মাছের জাল শুকায়
রাতের বেলা ধরা পড়েছিল মাছ
দিনের বেলা ধরা পড়ে ও পালিয়েছে,
আলো-বাতাস।
তেজপাতা
--------------
তেল হলুদ নুন লঙ্কা বাদে
আর কী নেই?
তেজপাতার মতো উড়ে এলো একটি মেয়ে
রান্নাঘরে।
ইঁটভাটা
-----------
গাছ তলায় ইঁট পেতে
আকাশে রেখেছে মাথা,
হলধর বাউরী।
তার পায়ের কাছে এসে পড়েছে
ঘাস পোকা।
তার মাথার চুলে বিলি কাটছে
সন্ধের শুকতারা।
ইঁটভাটায় জ্বলবে আগুন।
------২৬ চৈত্র ১৪২৮
-----১০----৪----২০২২
জবা ফুল
-------------
পোড়ো বাড়িতে জবা ফুলের গাছ।
ফুলের রেণু উড়ে উড়ে বেড়ায়।
জবা ফুল উড়ছেও।
মাটিতে কার পা?
মহুল
-------
গাছে মহুল
ঘুঙুর বাজায়।
ও ঘুঙুর পায়ে বাজবেনা।
পথে-পথেও বাজবে না।
শুধু
হরিমতির ঝুড়িতে,
ঝম ঝম করে বেজে উঠবে।
অসুখ
--------
গরুটা আজও পালে গেল না।
না--খড় না--মাড়
মুখে দেয় না কিছুই
অবলা প্রাণী।
গোয়ালের এক কোণে মাকড়সা
জাল বুনছে না আর।
------২৭ চৈত্র ১৪২৮
-----১১---৪----২০২২
কুঁচ ফল
-----------
গলায় পরবে বিছা হার
কোমরে পরবে বিছা---
মনের সাধ রয়ে গেল মনে
বনের দিকে ছুটে যায় মেয়ে
বুনোলতে পেকেছে কুঁচ ফল
রাঙা কুঁচ ফল গলায় গাঁথবে মেয়ে।
চুড়ি
------
এক গাছা চুড়ি শীর্ণ হাতে ঢলঢল করে
আরেক গাছা চুড়ি
ঘরের দেয়ালে পেরেকে টাঙানো।
সোনালি চুড়ির আভা সরল হয়ে ওঠে
রৌদ্র কিরণে।
-----২৮ চৈত্র ১৪২৮
-----১২----৪-----২০২২
ছিরি
-------
আকাশ যেন দোমড়ানো মোচড়ানো
ধোঁয়াটে ধোঁয়াটে
হাঁড়িতে ঢোকানো জামা কাপড়ের মত
ছিরি ছাঁদ নেই
চেয়ে থাকা মাটিও চিনতে পারছে না।
দণ্ডবৎ
---------
গরুর ক্ষুরে ধুলো এসে
পার হয়ে যায় রাস্তা।
একদিন গরুর লেজ ধরে
বৈতরণী পার, তাই
রাস্তার ধুলো
ক্ষুরে ক্ষুরে জানায় দণ্ডবৎ।
স্মৃতি
-------
বাক্স খুলতেই ন্যাপথলিনের গন্ধ।
স্মৃতি উঠে এলো।
শাশুড়ি বলেছিল, বেনারসিতে যেন
পোকা না লাগে, দেখো
বন্ধন যেন পোকায় না কাটে।
------২৯ চৈত্র ১৪২৮
-----১৩----৪----২০২২
ওল
-----
মাটি খুঁড়ে পেয়েছে একটি-দুটি ওল
যা ছিল পিঠের ভার
নামিয়ে চলে গেছে কেউ।
কাকতাড়ুয়া
----------------
সারাদিন পাহারা দিয়েও
তাড়াতে পারে না রোদ।
পুড়ে যায় শসার খেত, করলার পাতা
ছাগল এসেও মুখে টানে কচি ঝিঙা।
নীরব হয়ে থাকে হাঁড়ি মুখো কাকতাড়ুয়া।
-----৩০ চৈত্র ১৪২৮
-----১৪----৪----২০২২
ঠাঁই
------
রাত্রিবেলা
মেঠো ইঁদুরের দৌড়োদৌড়িতে
চাঁদ ও দৌড়োদৌড়ি করে।
চাঁদ ও খোঁজে ইঁদুরের গর্ত।
যদি কখনো গর্তে থাকা যায়,
আহারের অভাব হবে না।
আল
--------
শাড়ির পাড় ছিঁড়ে যেতে
ছুঁচ--সূতো খোঁজে প্রভাসের বউ।
যেন জমির আল ভেঙ্গে গেছে
বয়ে যাচ্ছে জল।
ফুল--ফলের রসদে টান পড়বে।
কল
------
যে দু একটা ঢেঁকি আছে
তার নিঃশ্বাসের শব্দ
ঘরের লোকের কাছে নেই
একা একা হাঁপিয়ে ওঠে ঢেঁকি
ধান ভানার শব্দ ওঠে কলে।
-----৩ বোশেখ ১৪২৯
-----১৭----৩----২০২২
পিঁড়ি
-------
আসনতো আছেই
তবে কুটুম এলে উঁচু আসন
পিঁড়ি পাততে হয়।
মাথার ছাদ
---------------
দেয়াল ফেটেছে
ঘরের মেঝে ফেটেছে
পা-ও ফেটেছে কাম কাজ করতে করতে
সূর্যকে আগলে রেখেও
আকাশ ফাটে নাই।
গরিবের এইটুকু ভরসা
মাথার ছাদ ফাটে নাই।
-----৪ বৈশাখ ১৪২৯
----১৮----৪----২০২২
পদ্ম
------
কাঠের পাটায় চড়ে
পুকুরে ঘুরতে ঘুরতে,
পদ্ম কাড়ছে ভরত কালিন্দী
বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের রুদ্র রূপ।
দিনযাপন
-------------
শুকনো পাত গুঁজে গুঁজে
কত আর জ্বালাবে উনুন!
উপর থেকে পাড়ে জ্বলন্ত কয়লা।
------৫ বৈশাখ ১৪২৯
-----১৯----৪----২০২২
-----নির্মল হালদার
আরও পড়ুন

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন