হরিতকি গর্ভের আলোয়
-------------------------------------
প্রেম
--------
কার সাহসে মেঘ পাড়বো
মেঘ চাষী তো আমার সঙ্গে নেই।
আমার সঙ্গে বাথান মুটরুডি
চিপিদা টাঙিদা
গ্রামের পর গ্রাম আমার সঙ্গে থাকলেও
কার সাহসে বাদাম উপড়াবো?
বাদাম চাষী তো আমার সঙ্গে নেই।
-----৩০ আশ্বিন ১৪২৯
-----১৭---১০---২০২২
-----নির্মল হালদার
সকাল বেলা
-------------------
সারারাতের পিপাসা
সূর্য এসে নিবারণ করে সকালের শিশিরে
বেলা হলে পুকুরে নামে নদীতে নামে
স্নানও করে।
স্নান করতে করতে ছুঁয়ে ফেলে
জলের তলে পড়ে থাকা পাথর,
মাছের গা।
সূর্যের পরশে জ্যান্ত হয়ে ওঠে নদীর কল্লোল।
-----৩১ আশ্বিন ১৪২৯
-----১৮---১০---২০২২
----নির্মল হালদার
ঝিঙে ফুল
----------------
ঝিঙে ফুলের হলুদ ছিটকে পড়ে মাটিতে
আজ ১ লা কার্তিক
হেমন্তের শুরু
ধান পেকে উঠছে ক্রমশ
ওই ধান আমার ঘরে না এলেও
ধান পাকা হাওয়া আসবে
তুমিও আসবে রজনী
আবছা হয়ে যাবে ধানক্ষেতের সবুজ
আমি অন্ধকার হাৎড়ে খুঁজে বেড়াবো
জোনাকির ওড়াউড়ি।
২:
ঝিঙে ফুলের হলুদ আমার অঙ্গে অঙ্গে
আমিও লতায় পাতায়
সারারাত আমার কাছে ছিল নক্ষত্রের নিবিড়তা
সকালবেলা শিশিরের ছ্যাঁকা,
জেগে উঠেছি।
আমাকে খুঁজতে আসবে অবনীর মা
পাতার আড়াল থেকে আমি বলে উঠবো,
এইতো আমি এইতো----
রঙের কাঙাল।
-----১ লা কার্তিক ১৪২৯
-----১৯---১০--২০২২
-----নির্মল হালদার
মালা
--------
প্রতিটি শিশির ফোঁটা গেঁথে ফেলি
প্রতিটি শিশির ফোঁটা হয়ে ওঠে
শান্ত একটি মালা
সমর্পনেই খুঁজে পেয়েছে বন্ধন মুক্তি।
-----২ কার্তিক ১৪২৯
------২০---১০---২০২২
------নির্মল হালদার
এই সকাল
----------------
উড়তে উড়তে ফড়িংয়ের পায়ে লাগলো শিশির
সূর্যের কিরণ এসে পায়ে পায়ে ওড়ে।
সরষে ফুলের রেণু গরুর পায়ে পায়ে
শিঙেও লটকে গেছে।
কে পাঠালো এই সকাল?
আমি তো লিখিনি চিঠি আজকাল আর
আমার প্রেমের প্রস্তাব, নীরবে
চাঁদের কাছে শেষ রাতে।
লিখন
----------
তুমি না এসে
আমাকে পাঠালে চাঁদ
শেষ রাতে
চাঁদের গায়ে কী লিখবো?
আমি তো কানের লতিতে লিখতে চাই
একবিন্দু বৃষ্টি
আমার অস্থিরতা।
-----৩ কার্তিক ১৪২৯
-----২১---১০---২০২২
-----নির্মল হালদার
কাক
--------
বাসন মাজার শব্দ হলে উড়ে আসে কাক
এঁঠোকাঁটা পড়ে থাকলে কাকের আহার।
ও বড় বউ ও ছোট বউ
কাক আমাদের কুটুম না হলেও
কাকও একটা পাখি,
ভোরের মুখ।
এই মুখের দিকে চেয়ে ফুটে উঠছে,
লঙ্কা ফুল।
------৪ কার্তিক ১৪২৯
-----২২---১০---২০২২
-----নির্মল হালদার
এক নারীর একগুচ্ছ চুল থেকে
একটি চুল আলাদা করতেই,
একটি কালো রেখা।
যেন বা চিত্রকরের একটা টান।
পেন্সিলের টান।
এই রেখার দিকে চেয়ে
কবি রচনা করলেন একটি বিষাদের কবিতা।
হেমন্ত ঋতুর কবিতা।
-----৫ কার্তিক ১৪২৯
-----২৩---১০---২০২২
-----রাত্রি-৭---১২
-----নির্মল হালদার
নন্দিনী
-----------
হেমন্তের হিম ঝরা অন্ধকারেও মাছের খেলা
জলে জলে।
আমিও ঢেউ থেকে ঢেউ
আমিও আঁচল ছুঁতে চাই পাড় ছুঁতে চাই
আমি ডেকে উঠি: নন্দিনী নন্দিনী-----
আমার প্রতিটি ডাক হয়ে ওঠে নক্ষত্র।
---৬ কার্তিক ১৪২৯
----২৪---১০---২০২২
-----নির্মল হালদার
দৃশ্যের ভেতরে আরো দৃশ্য
---------------------------------------
বক এসে দাঁড়ালো নদীর পাড়ে
সূর্য এসে দাঁড়ালো নদীর পাড়ে
সূর্য তো স্নান করবে মাছ করবে শিকার
আর আমি বাবলা গাছে খুঁজবো রক্তের দাগ
বাবলা কাঁটা বিঁধেছিল আমার আঙুল
অথচ একটাও ফুল পাইনি
অবনীকে পেয়েছিলাম
চোর কাঁটার মত দাঁড়িয়ে ছিল,
নির্বাক।
-----৭ কার্তিক ১৪২৯
-----২৫---১০---২০২২
-----নির্মল হালদার
দ্বিপ্রহর
------------
রামানুজ একটা মন্দির পাঠালো
তার ঘন্টা ধ্বনিও শুনতে পেলাম
এই দুপুরে-----
পায়রার খিদেও শুনতে পাই।
খিদেও দেবতা এক
তার ভজনাও করি, পায়রাদের কাছে নিয়ে যাই
এক বাটি মুড়ি
দ্বিপ্রহরের রোদ স্তব্ধ হয়ে আসে।
ভালোবাসায় বেঁচে থাকা
------------------------------------
সারাদিন একটা ইশারা
একটি ইশারায় হাঁসের কোলাহল
মুরগির ডাক বাঁশ বনের হাওয়া
রাস্তা আসে রাস্তা যায়
সারাদিন একটি ইশারা
একটি ইশারায় পানকৌড়ির ডুব
গুগলি--শামুক পদ্ম বনের ডাক
মৌমাছি আসছে।
আজও রোদ আসছে
রোদ ঢুকে পড়ছে ঘরে ঘরে
গায়ের ঘাম নুনের জলে রোদ ভিজবে
আমাকে ভালোবেসে।
-----৮ কার্তিক ১৪২৯
-----২৬---১০--২০২২
-----নির্মল হালদার
সংসার
-----------
সংসার বলতে একটা ঘর
একটা জলের কলসি
জানালার ফাঁকফোকরে একটু আকাশ
একটা দুয়ারও আছে,
তুমি দাঁড়ালে হৃদয় দিব রাঁধিয়া।
-----৮ কার্তিক ১৪২৯
----২৬---১০---২০২২
----নির্মল হালদার
লাল-হলুদ গাঁদার আলিঙ্গনে
গোলমাল ক 'রোনা , চুপ করো।
লাল- হলুদ গাঁদার আলিঙ্গনে
সাত রঙের কিরণ
গোলমাল ক 'রোনা ,চুপ করো
রঙে রঙে বাতাসও ছুটছে
রঙিন ছুটছে
এসময় কথা ব'লোনা, এ সময়
লাল--হলুদ গাঁদার আলিঙ্গনে
ধুলোর সঙ্গে ধুলো হয়ে
আমিও চুপ
মিলনের মধু ঝরছে।
-----১০ কার্তিক ১৪২৯
----২৮--১০--২০২২
----নির্মল হালদার
আরও পড়ুন

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন