সোমবার, ২ মে, ২০২২

শীতল উষ্ণতা




২০০৮ --এর শেষ নাকি ২০০৯--শুরু থেকে আলাপ
আজ আর স্পষ্ট মনে নেই।

অনেক অনেক গুলো দিন পার হয়ে গেল। সম্পর্কের সেতুতে আসা যাওয়া হলো   ভালোবাসা থেকে ভালবাসায়।

এবং সেই ভালোবাসা দীর্ঘ করেছে
আমাদের উষ্ণতাকে। আমরা দুজনেই দুজনের পায়ের শব্দ শুনতে পাই।

রানার নিঃশ্বাসও এই মুহূর্তে 
শুনতে পাচ্ছি। তার ডাক শুনতে পাচ্ছি। 

আমিও বলছি, এইতো একটু পরেই তোর কাছে যাবো। 
একটু অপেক্ষা কর ভাই।  

তোর কাছে যেতেই হবে। তুই যে
শীতল রানা।
শীতল যে এই এত উষ্ণ---উদার,
তোর সঙ্গে আলাপ না হলে, কখনোই জানতাম না।

উদারতা গ্রহণ করতে পারবো কি?
আমি ভয় করি। কেননা, আমি যে ছোটখাটো মানুষ। কত তুচ্ছ বিষয়ে আমার সংকীর্ণতা আছে। যা রানার মধ্যে নেই।

শীতল রানাকে আমি   ছোট করে 
রানা বলেই সম্বোধন করি। 
আলাপের প্রথম থেকেই। 

পুরুলিয়ার গ্রামের ছেলে, শহরে এসেছিল লেখাপড়া করতে। 
মেসবাড়িতে থাকতো।
সে শুধু না, সঙ্গে ছিল বাবন ভোম্বল।

আমার বাড়িতে যে কোনো বিষয়ে
একসঙ্গে তিন জনকেই ডেকেছি---একসঙ্গে তিনটি নাম
উচ্চারণ করতে মধুর লেগেছে---

রানা বাবন ভোম্বল।

প্রথমের আলাপ বিস্তার লাভ করতে করতে আমার শরীর খারাপ হলে রানা আমার কাছে এসে থেকেছে।

একটা সময় আমি বুঝতে পেরেছি, আমি রানার প্রতি নির্ভরশীল। বিপদে-আপদে পড়লে তার পরামর্শ তার সাহায্য।
 তার কাছে ছুটেও গেছি।তাদের
মেসবাড়িতে।
তখন ওরা কুকস কম্পাউন্ডে থাকতো। 
কখনো কখনো সকাল দিকে
চলে গেছি।

মুড়ি খাবো।

কখনো কখনো দুপুর বেলায় ভাত। তা শুধু রানার টানে।

একটা সময় ছিল রানা শহরে থেকে লড়াই করছে। দুবেলা টিউশন। তাকে কাছে পাওয়াটাও
কঠিন। টিউশন থেকে রাত দশটার পরে ছুটি। রোববারেও সে পড়াতো।

চাকরি পেলেও তার টিউশন থেমে যায়নি। লড়াই থেমে যায়নি।
গ্রামের বাড়ি চাকরির জায়গা এবং পুরুলিয়া করতে করতেও
সে বিধ্বস্ত নয়।

কোনো শীতলতা তাকে স্পর্শ করেনি। বরং সে  শীতল -উষ্ণ।
তাকে আরো উষ্ণতায় পূর্ণ করবে
তার নতুন সঙ্গিনী।

সে নতুন জীবনে প্রবেশ করতে চলেছে। তার নতুন জীবনের জন্য
এই গ্রীষ্ম দিনের আকাশ বাতাস
বেলি ফুলের সুগন্ধ ছড়ায়।

বিবাহ মঙ্গলের চরণ ধ্বনি বেজে উঠছে পথে পথে। অভিবাদন জানায় গাছপালা। কৃষ্ণচূড়া সেজে উঠেছে বিবাহ বাসরে যাবে।

রানার মাথায় ধান দূর্বা।

মা বাবার আশীর্বাদ। ঈশ্বরের আশীর্বাদ। সকলের শুভেচ্ছা নিয়ে
বিবাহ বন্ধনে আমাদের রানা।

রানাজী।

আমিতো আর এখন রানাও বলি না। কাছে থাকলে কিম্বা ফোনেও
"রানাজী"।

যার অন্তর থেকে ফুলের সুবাস।

ছড়িয়ে পড়তে পড়তে পাখপাখালির কাছে। যারা রানার কাছে যাবে-----তার হাত থেকে 
খুঁটে খাবে আলোবাতাসের মত
আহার।

সেই দৃশ্যটি দেখতে দেখতে 
ফল পেকে উঠবে গাছে গাছে।

পাতা ছুঁয়ে ফেলবে আরেকটি পাতা।


-------১৮ বৈশাখ ১৪২৯
------২----৫----২০২২
------নির্মল হালদার



















কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কবি নির্মল হালদারের বিভিন্ন সময়ের ছবি

পড়ুন "ঘর গেরস্থের শিল্প"

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ