শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২২

যৌথ খামার



যৌথ খামার
-----------------
বাঁশ বাগানের মাথার উপর
চাঁদ উঠেছে ওই
মাগো আমার শোলক বলার
কাজলা দিদি কই?

বাঁশবাগান দেখলেই, যতীন্দ্রমোহন বাগচীর এই কবিতাটি কাছে এসে যায়।

বিষণ্ণতাও জাগে।

কাজলা দিদি কই? কোথায়?

বাঁশ বাগানে মুরগির লাফালাফি।
বাঁশপাতা কেঁপে কেঁপে ওঠে।

বাঁশ বাগানের পাশেই সরু কাঁচা রাস্তায় চলে যাচ্ছে সাইকেল।

কোথায় যাবে কার কাছে যাবে?

বাঁশ-বাগানের ছায়ায় দাঁড়িয়ে আছে গরু। কার অপেক্ষা করছে?
কে আসবে?

বাঁশ বাগানে দাঁড়িয়ে থাকলেও
বাঁশি বাজে না।

মোহন বাঁশি বাজে না।

কোথায় গেছে রাখাল?

বাঁশের অনেক গল্প আছে।
অনেক কাহিনী।

একা একা একটা বাঁশ বেড়ে ওঠে না। সব সময় একসঙ্গে। আর তাই
আরো অনেককে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে।

বাঁশ হলো কুটির শিল্পের উপাদান।
রুটি রুজির উপাদান।
বাঁশ থেকে ঝুড়ি ঝাঁটা।কুলো ইত্যাদি ইত্যাদি।

পুরুলিয়াতে একসময় বেশ বড় বড় বাঁশের ছাতা তৈরি হয়েছে।
যা মাঠে-ঘাটে কাজ করা মানুষ
ব্যবহার করতো। বাগালরাও বাঁশের ছাতা মাথায় গরু বাগালি করেছে।
সময় পাল্টে গেছে।  বাঁশের ছাতার বদলে আরো কত রকম ছাতা। বাজারে বাজারে।

একসময়ের কুটির শিল্প 
আজ ধুঁকছে। ফলে, কুটির শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষও ধুঁকছে।

মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পাশাপাশি বাঁশ তার যৌথতা থেকে এক তিল সরে দাঁড়ায়নি।

একটা বাঁশ পুঁতলে অনেক বাঁশের জন্ম। বাঁশ জানে বংশবিস্তার করলেই মনুষ্য বংশের উপকার হবে। যদিও মানুষ জানে না, বাঁশের মত যৌথ সংসার। 

মানব জীবনে অথবা মনুষ্য জগতের কাছেই থাকে এক--একটি বাঁশ বাগান। যেখানে
আলাপ বিস্তার করে পাখিরা।

বাঁশ বাগান থেকে বাঁশিও পাড়ে
একটি মেয়ে। গ্রাম বাংলার মেয়ে।

শুধু কি বাংলা?

আসাম ত্রিপুরায় বাঁশ থেকে
নানারকম ব্যবহৃত দ্রব্য তৈরি হয়ে থাকে। সেইসব রাজ্যে বাঁশ একটি বড় শিল্প।

চিত্রকরের কাছেও বাঁশ একটি শিল্পের উপাদান। কবি ও শিল্পী
শ্যামল বরণ সাহার  তুলিতে 
বাঁশের ছবি বিখ্যাত।

অভিজিৎ মাজীর ক্যামেরাতেও
বাঁশের ছবি। বাঁশ বাগান। 

আমি চেয়ে আছি-------------।

প্রকৃতির ধর্মই হলো যৌথতায় থাকা। সেই যৌথতার চুড়ান্ত রূপ বাঁশের শোভা।

শুকনো বাঁশ পাতার উপরে একটি পোকা চলে গেলেও শুনতে পাবো তার শব্দ।

হাওয়ার শব্দ উঠছে। এবং হাওয়া
বাঁশ বাগান থেকে বাঁশির ভেতরে।
বয়ে যায় সারাদিন।


-------বেলা-----৩---৪৬
-------১৬ বৈশাখ ১৪২৯
-------৩০-----৪-----২০২২..
-------নির্মল হালদার


































ছবি : অভিজিৎ মাজী


















কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কবি নির্মল হালদারের বিভিন্ন সময়ের ছবি

পড়ুন "ঘর গেরস্থের শিল্প"

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ