বৃহস্পতিবার, ৫ মে, ২০২২

ধূলা উড়ানিয়া

ধূলা উড়ানিয়া
-----------------

একটি গাছের তলে একটি মানুষ।

যুবক হতে পারে। মধ্যবয়স্ক হতে পারে। সে আধশোয়া।পাশেই পড়ে আছে একটি বাঁশের লাঠি।
গরুকে শাসন করার জন্য।

এই মানুষটি হলো বাগাল।

রাখালও বলা হয়ে থাকে।

রাখাল বললেই , কৃষ্ণ বা কানাই কে মনে পড়ে। গরু চরাতে চরাতে
বাঁশি বাজায়। রাধার সঙ্গে প্রেম করে।

আজকের বাগালের সঙ্গে অমিল
অবশ্যই আছে। আজকের বাগাল
সকালে এক জামবাটি ভাত খেয়ে এসেছে। দুপুরে আরেকবার যাবে খাওয়ার জন্য। গাই-গরুদের দায়িত্ব দিয়ে যাবে অন্য কোনো বাগালকে। অথবা তাকে খাবার দিয়ে যেতেও পারে ঘর থেকে।

কি গ্রীষ্ম কি শীত কি বর্ষা
গাই--গরুদের সঙ্গে বাগাল। একটা মাঠে বাগাল।

কোনো কোনো মাঠে  ছায়াও
থাকেনা। কাছাকাছি জলাশয় থাকে না। 

গরুদের জল খাওয়াতে হবে।

সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তবেই তো সে বাগাল হতে পারবে। মাঠে মাঠে ধূলা উড়লেও সে প্রহরী।
গাই--গরু ছেড়ে কোথাও যাবেনা।
মন ভালো থাকলে অথবা খারাপ থাকলেও ঝুমুর হাঁকাবে। আজকালকার কোনো কোনো
বাগাল চটুল গানও করতে পারে।
করেও।
সেও তো প্রযুক্তি--প্রবল সময়ে
বসবাস করে।

আস্তে আস্তে এই বাগালি করা জীবিকা লুপ্ত হতে চলেছে।
ঘরের লোক  নিজেরাই গরু বাগালি করতে মাঠে যায়।

আমার কাছে বাগাল একজন
নিঃসঙ্গ মানুষ। যে গাই--গরুর সঙ্গে থেকেও একাকী। নীরব।

ঈশ্বরের মতো?

আমি একটি ছবি দেখতে পাই,
যে ছবির পটভূমিকায় ধুলো উড়ছে শুধু ধুলো । একটি বাঁশিও পড়ে আছে এবং শূন্য বাঁশির
ভেতরে শুয়ে আছে রাখাল।

আমাদের বাগাল ছোঁড়া।


---------২১ বৈশাখ ১৪২৯
--------৫----৫----২০২২
-------নির্মল হালদার























ছবি : অভিজিৎ মাজী









কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কবি নির্মল হালদারের বিভিন্ন সময়ের ছবি

পড়ুন "ঘর গেরস্থের শিল্প"

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ