উপেক্ষিতা
-------------------------
কুমড়া ফুল দেখা যায়। চাহিদাও আছে। ঢেঁড়সের ফুল?
ঢেঁড়সের ফুল দেখতে কেমন প্রশ্ন করলে উত্তর পাবো না।
গ্রামে যাদের বসবাস, তারা দেখতে পারে। ঢেঁড়সের চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু ফুলটি তাদের কাছে কি আকর্ষণীয়?
কুমড়া ফুলের হলুদ রঙ মন টানে।
ঢেঁড়স ফুলের পাপড়ি হলুদ নয়।
হলদেটে। এবং গাছটিও ঢ্যাঙা। রূপে ততটা সুন্দর নয়।
ঢেঁড়সের গায়ে এক রকমের রোঁয়া আছে।হাতে ধরলেই খোঁচা লাগে।
চোখেও খোঁচা লাগবে যখন দেখবে ঢেঁড়সের মাথা নিচে। পা উপরে।
এই গাছের কদর করবে কে?
ঢেঁড়সের বাজার দর খুব একটা নেই। উচ্ছে বেগুন পটলের মত ফুলকপির মত
চাহিদাও নেই।
তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের জায়গাতে ঢেঁড়সের অবস্থান। আর তাই আমাদের কথাবার্তায় এসেছে-----
ছেলেটা একদম ঢেঁড়স।
যার উদ্দেশ্যে এই কথা বলা হয়
বা বলা হচ্ছে যখন, তখন একটা মায়া কাজ করে।
আমি ঢেঁড়সের দিকে চেয়ে থাকি।
সবজি বাজার থেকে সংগ্রহ করি
ঢেঁড়স। তার গায়ে উঠে থাকা শিরা গুলি আমারই তো।
আমাদের শ্যাম ভাইয়া বর্ষার সময়
গাছের চারা বিলি করেন। মূলত
ফলের চারা। আমি অনেকবারই তাকে প্রস্তাব দেবো স্থির করেও দিতে পারিনি।
হ্যাঁ, উনি যদি ফলের চারার সঙ্গে
সবজির চারাও বিলি করেন, অনেকেই উপকৃত হবে।
ঢেঁড়সের শাদা শাদা বীজ আলোর কণার মত।চোখ জুড়িয়ে যায়।
মেয়েদের নাকের ছেঁদায় গুঁজে দিলেও মানিয়ে যাবে।
তো এই ঢেঁড়স গাছ চাষীকে বঞ্চিত করে না। প্রায় সারা বছর কমবেশি ফলন। প্রধানত গ্রীষ্মকালেই ঢেঁড়সের ফলন বেশি।
নিম্নবিত্ত বাঙালির ঘরে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে টমেটোর সঙ্গে ঢেঁড়সের টক।
গরম কমে যায়।
অনেকেই ঢেঁড়স সেদ্ধ পছন্দ করে। অনেকেই আছে ঢেঁড়স ভাজার দিকে।
ঢেঁড়সের গুনাগুন নিয়ে বিচার করবেন ব্যাখ্যা করবেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। আমি বন্ধুজীবী একজন, আমি দেখেছি আমাদের বন্ধু
কবি ও চিত্রী শ্যামল বরণ সাহা
ঢেঁড়স কেটে রঙে চুবিয়ে কাগজে
ছাপ দিতেই একেকটি ফুল হয়ে উঠছে।
প্রায় উপেক্ষিতা একটি সবজি
শিল্পে রূপান্তরিত হয়েও থাকে।
আমাদের ব্যবহারিক জীবন থেকে
কখনো কোথাও শিল্পে প্রবেশ করে ঢেঁড়স।
আমি নতজানু হই।
------ ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯
-----২৩-----৫-----২০২২
------নির্মল হালদার
ছবি : দেবমাল্য মাহাত ও বাপি কর্মকার
আরও পড়ুন























কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন