তারুণ্যের ধ্বজা
---------------------
বাপি। বাপি কর্মকার
প্রতিবছর বৈশাখ সংক্রান্তিতে
গাজনের মেলাতে যাত্রা পালায়
অভিনয় করে।
বাপিদের গ্রাম বাথান।
বাথান গ্রামের কাছে কোনো নদী নেই। আছে পাহাড়। আর আছে গ্রামের মানুষ। দৈনন্দিন জীবনের লড়াই করতে করতে বিনোদন খোঁজে।
হাততালিও খোঁজে।
কোনো মেডেল নয়। শুধুমাত্র হাততালি। আর তাই গ্রামের
কিছু যুবক সংগঠিত হয়ে
যাত্রাপালার আয়োজন করে।
মহিলা শিল্পীর অভাব আছে।
অর্থের অভাব আছে। তারপরও তারা গ্রাম থেকে অর্থ সংগ্রহ করে
নিজেরাও নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়ে বছরে একবার যাত্রাপালা।
একটা সময় ছিল যখন শহরের পাড়ায় পাড়ায় নাটক। সঙ্গীত অনুষ্ঠান। খেলাধুলো। এবং গ্রামে গ্রামে যাত্রাপালা।
এখন সমস্তই প্রায় বিলুপ্তির পথে।
সেখানে বাপি ও তার বন্ধুরা যে
যাত্রাশিল্পের কাছে নত হয়েছে,
এ বড়ো সুখের কথা।
একটা দিন গ্রামের মানুষ নিজেদের অভাব-অভিযোগ ভুলে
নিজেদের গ্রামের যুবকদের রঙ করা মুখ দেখবে। অভিনয় দেখবে। দেখবে, যে বাপি কাজে কর্মে চলাফেরায় অতি মন্থর, সে
যাত্রার মঞ্চে হয়ে উঠছে ঝড়।
মাহাতদের ছেলেটা অধিকাংশ সময় চুপচাপ থাকে। সে অভিনয়ে
কি কান্না যে কাঁদতে পারে, কাঁদাতে পারে দর্শকদের। না দেখলে হবেনা।
ভাড়াটে মহিলা শিল্পীরাও একটা রাত যাত্রার মঞ্চে অনন্যা হয়ে ওঠে। গ্রামের মানুষ হয়ে ওঠে।
কোথাও তো কিছুই হয় না আজকাল। শুধু ধুলো ওড়ে।
শুকনো জমির উপর বয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস। এখানে আশার কথা এই, কোথাওতো বাজছে রক্তের বাজনা। কোথাওতো উড়ছে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস।
তারুণ্যের ধ্বজা।
-------২৫ বৈশাখ ১৪২৯
-----৯----৫----২০২২
-----নির্মল হালদার
ছবি : সন্দীপ কুমার
আরও পড়ুন









কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন