বৈশাখ মাস জন্ম মাস।
গাছে গাছেও জন্ম নেয় নতুন পাতা। কৃষ্ণচূড়ার রঙে রঙিন হয়ে ওঠে মাটি।
বৈশাখে ঝড় বৃষ্টি আসে।
কোথাও কোথাও জমিতে লাঙ্গল নামে। বীজ ফেলা হয়।
নতুনকে আহ্বান করা হয়।
আমি আহ্বান করেছি আমাদের বন্ধু প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
সেওতো নতুন এই ২৪ বৈশাখ।
দীর্ঘ দীর্ঘ দিন গল্প হয়নি আমাদের। কত মেঘ এসে চলে গেল। বাতাসতো বইছেই।
অথচ আমরা কোনো কথা বলছি না। এই দীর্ঘ নীরবতা আর সইছে না। আর তাই তাকে ডেকেছি।
যদি কথার পর কথা শেষে দু একটা কবিতা শোনায়।
কবিতা শুধু আমি শুনবো না।
বাগবাজার থেকে চকবাজার
সবাই শুনবে।
প্রসূনের কাছেই তো গঙ্গা।
আমার কাছে কাঁসাই।
দুজন এক হয়ে গেলে জ্যান্ত হয়ে উঠবে এই খর দিনের মাটি।
আমরা দুজনেই কপালে এঁকে নিতে পারবো মাটির তিলক।
না, কবিতার নান্দনিক তত্ত্ব নিয়ে
কথা বলবোনা। বলবো, সেই যে একটা সময় ছিল আমি হঠাৎ হঠাৎ প্রসূনের বাগবাজারের বাড়ি
চলে গেছি। খাওয়া-দাওয়া আড্ডা । আত্মীয়তা।
যৌবনের ভরন্ত উল্লাসে পানীয় ভোজন। আলিঙ্গন করেছি চাঁদের
গরব। যে গরবে নেচে উঠেছে লুকিয়ে থাকা পোকামাকড়।
লুকিয়ে ছিলো না আমাদের কবিতা। প্রসূনকে বললাম----
"বালি ও তরমুজ"থেকে কবিতা
পড়া হোক।
"বালি ও তরমুজ" প্রসূনের প্রথম কবিতার বই। তার আগে থেকেই তার কবি পরিচিতি।কফি হাউস
কাঁপানো যুবক।
তখন মধ্যমণি পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল। তাকে ঘিরে রচনা হয়েছে একটি বৃত্ত। নিশীথ ভড়
যেমন ছিলেন তেমনই ছিলেন
রণজিৎ দাশ। সেদিনের সেই অনির্বাণ লাহিড়ী। অমিতাভ মন্ডল। প্রবুদ্ধ মিত্র।
গৌতম চৌধুরী মৃদুল দাশগুপ্ত
তারাও আসছে। অনুরাধা মহাপাত্র আসছে। এসে পড়ছে
৭০ দশকের জঙ্গী কবি ও গল্পকার।
আরো অনেকে ছিল, সময়ের স্রোতে কে কোথায় যে গেল, আবছা হয়ে যাচ্ছে চারদিক।
আমি আজও প্রসূনদের সিঁড়ি দিয়ে উঠছি। উঠতে উঠতে-----
নন্দিনী নন্দিনী------।
নন্দিনী প্রসূনের যোগ্য সঙ্গিনী।
আমাদের সকলের বন্ধু।
তেঘরিয়া/দমদমা/বীরভূম জেলার একরাম আলিও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কফি হাউস। উত্তর কলকাতায়
প্রসূনের বাড়ি।
প্রসূনের বাড়িতে মেসোমশাই মাসিমা। বামমা। ঝুপপি। এবং তপন দাকে দেখতে পাচ্ছি।
ধুলো তো মুছতেই হবে।
কখনো কখনো কুয়াশা। দুহাতে ঠেলে এগিয়ে যাচ্ছি বাগবাজারের ঘাটের দিকে।
ঘাটে নৌকো বাঁধা নেই। শুধু ঢেউ উঠছে। ঢেউ।
আরেকটা ২৪ বৈশাখ। আরেকটা
জন্মদিন।
আমাদের অগ্রজ বন্ধু কালীদা
লম্বা পা ফেলে ফেলে এগিয়ে আসছেন। প্রসূণকে শুভেচ্ছা জানাবেন।
আমাদের বন্ধুতার বয়স কত হলো?
কত রাত হলো?
বৈশাখের বেলি ফুল ফুটে উঠতেই
ভোরের শুকতারা।
ট্রামের আওয়াজ।
প্রসূনের নতুন কবিতার পথ চলা শুরু। জন্মদিন তো তাই বলে। শুনতে পাই, তার শব্দ। তার কথা।
তার সুর।
প্রসূনের চোখের আলোয় রবির কিরণ।
-------২৩ বৈশাখ ১৪২৯
-------৭-----৫-----২০২২
-------নির্মল হালদার
ছবি : সন্দীপ কুমার
আরও পড়ুন






কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন