হাঁসগুলি ভেসে ভেসে করে কোলাহল
----------------------------------------------
হাঁসের ঘর যাইনি কখনো।
হাঁসের দেশ বাড়ি কোথায়? কত দূরে?
হাঁস তো মাহাত ঘরেও থাকে।
হাঁস তো মন্ডল ঘরেও থাকে।
হাঁস তো বাউরি ঘরেও থাকে।
ওই ঘরগুলি হাঁসের ঘর নয়?
হাঁসের ঘর যাইনি কখনো।
হাঁসের খাদ্যাভাস কতটা আমিষ কতটা নিরামিষ আমি জানি না।
হাঁসের সঙ্গে হাঁসিনির ভাব--অভাব
কতটা কতদূর, আমি জানি না।
এই যে হাঁস গুলি চলেছে , তাদের
পায়ে পায়ে একটা পথও চলেছে,
ওই পথে আমি কি কোনোদিন গেছি?
সরু পথ দু'দিকে ঘাস, দু' একটা আগাছা আমি কি চিনি?
আমি চিনি নাই, চিনি নাই হাঁসের
ডানায় লেগে থাকা আলো ছায়া।
হাঁসের চলার পথ কি আলাদা?
হাঁসের সঙ্গে আমি থাকতে পারি না? হাঁসের সঙ্গে সুখ দুঃখে থাকতে পারি না?
মাহাত ঘরে হাঁসের কাছাকাছি থাকে মুরগিরা।
আমি তো মুরগির ঘরও যাইনি।
কার ঘর গেছি?
আমার ঘর কোথায়?
বাথানে আমার একটা ঘর থাকলে, ডাকাকেঁদুতেও আমার ঘর। পিঁড়রা সুজানডিতে আমার ঘর থাকলে, রক্তকরবী আমার ঘর।
ধুতরা ফুলের ভেতরে আমার আশ্রয় হলে আমি সাড়া দিয়ে যাবো।
যদি গরুর পেটের ছায়ায় শুয়ে থাকি, সাড়া দিয়ে যাবো। যদি তালের ভেতরে থাকি কিংবা তরমুজের ভেতরে
সাড়া দিয়ে যাবো।
এই যে হাঁস ডাকতে ডাকতে যায়,
আমি কি সাড়া দিতে পাচ্ছি? এই তো জলে নেমে গেল হাঁস, এই তো শুরু করছে সাঁতার। তারা পায়ে পায়ে জল কাটতে কাটতে
জলে আঁকছে আলপনা।
এই তো এই তো --------------।
জলে নামতে পাচ্ছি কই?
ওই যে মুখ ডুবিয়ে ডুবিয়ে গেঁড়ি-গুগলি তুলছে।
আমি কি পারবো?
পুকুর ছোট হলেও হাঁসের সাঁতার
পুকুরকে লম্বা-চওড়া করে। এই সাঁতারের কাছে কোনো রাখাল নেই। এই চরে বেড়াবার জলে কোনো লক্ষণ রেখাও নেই। শুধু
জলের সঙ্গে সহবাস।
হাঁসের ডিমের পাশে আমি পাহারায় থাকবো না কখনো। তবুও ডিম গুলি অটুট থাকবে
হাঁসের কল্যাণে।
কেন না, হাঁস চলার পথেই
আমি একদিন হেঁটে যাবো পুকুরের দিকে। ডোবার দিকে।
আমার ক্ষুদ্র জীবন যে সব সময় শুনতে পায়-------
হাঁস গুলি ভেসে ভেসে করে কোলাহল।
এই কোলাহল সুরের পথ সৃষ্টি করে জলে জলে।
------২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯
------৪-----৬----২০২২
------নির্মল হালদার
ছবি : দীপাংশু মাহাত
আরও পড়ুন





কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন