গিমা শাকের গরিমা
-------------------------
পালং শাকের চাহিদা আছে। সারাবছর। শীতকালে তো তার রূপ লকলক করে। বাজারি মানুষকে লোভী করে।
শাকের মধ্যে পালং হলো উঁচু জাতের শাক। কদর আছে। দাম আছে। পাশাপাশি পুঁই শাক থাকলেও চাহিদা নেই।কেননা,
পুঁইয়ের সঙ্গে সব সময় অন্য আরেকটা সবজি লাগে। বিশেষ করে পুঁই কুমড়া মানানসই। আর
গিমা শাক?
শহরের অনেক মানুষ চেনেই না।
না--চেনার ই কথা।
গ্রাম থেকে ঝুড়ি মাথায় বাজারে এসেছে। এবং বিক্রি হচ্ছে না কেজি দরে। পাঁচ টাকা ভাগ নিয়ে যাও--------।
কী শাক এত সস্তায় বিক্রি হচ্ছে?
জানার জন্য বেশিরভাগ মানুষের কোনো কৌতুহল নেই।
পালং শাকের বীজ বিক্রি হয়ে থাকে। গিমা শাক নিজের আনন্দে মাটি ফুঁড়ে ওঠে।
বাঁধের ধারে।ডোবার ধারে। ধানক্ষেতেও। এই
গ্রীষ্ম দিনে।
ছোট ছোট পাতা।ছোট ছোট ফুল।
ভুঁইয়ে লুটিয়ে থাকে। যেন জন্ম থেকেই মাটি-ধূলার পায়ে বিনত
হয়ে আছে।
গিমা শাকের বীজ কোথায় লুকিয়ে থাকে? মাটির কত গভীরে?
জলা জায়গায় বেড়ে ওঠা, বেঁচে থাকা গিমা শাক তেতো নয়।তিতকুটে বলতে পারি ।
আমাদের ঘরে কুচো কুচো আলুর
সঙ্গে আদা বাটা আর জিরে গুঁড়োর মশলা দিয়ে রান্না করা হয়। খেতে বেশ লাগে। শুধু গিমা
শাকের তরকারি দিয়ে অনেকটা ভাত খাওয়া যায়।
ছোট ছোট সুখ দুঃখ নিয়ে গিমা শাক বছরে একবার এলেও চেয়ে থাকতে হয়।
গিমা শাকও সবুজ।
তার আদর নিতে আমরা ভুলে যাই।যেমন ভুলে যাই,সজনে শাকের উপকারিতা।
সজনে শাক সেদ্ধ করা জল খেলে
রক্তচাপ কমে।
আমাদের পুরুলিয়াতে তো গাঁয়ে গাঁয়ে অধিকাংশ ঘরেই সজনে গাছ। সজনে ডাঁটা সজনে ফুলতো খেয়েই থাকে
তার সঙ্গে সজনে পাতা বা শাক খাওয়া হয়। ভাতের সঙ্গে।
সজনে পাতার ঝাড় বিক্রি হয়ে থাকে আমাদের পুরুলিয়া বাজারে।
সজনে ফুলের টুপটাপ শুনতে পায় অনেকে। সজনে পাতার পতন কতজন শোনে?
গিমা শাকের চলে যাওয়া আমরা দেখতে পাই না। তার আসবার শব্দ কে শোনে?
গিমা শাকও থেকে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে। তার কাছে যেতে হবেই। যত জলদি যাওয়া যায় তত কল্যান।
শিশিরে শিশির ভেজা সকালবেলা
আমাদের জুটবে।
------১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯
------৩০----৫----২০২২
------নির্মল হালদার
ছবি : বাপি কর্মকার
আরও পড়ুন















কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন