সূর্যাস্ত এক মায়া
---------------------
গরুর পায়ে পায়ে ধুলো উড়ছে।
ঘরে ফিরছে গাই--গরুর দল।
ঘরে ফিরছে সূর্যদেবও।
করুণ আলো ছড়িয়ে পড়ছে চরাচরে। ব্যথা-বেদনা-আনন্দ এক হয়ে পাহাড়ে নদীতে গাছের মাথায় মাথায়।
বকের ডানায়।
এক সৌন্দর্যের শান্তি। শান্তির সৌন্দর্য।
আমি হাঁটছি ওই দিকে।
আমার চলার পথে আমাকে দেখছে কয়েকটা পাখি। যাদের সঙ্গে কখনো দেখা হয়নি। যাদের সঙ্গে কখনো আর দেখা হবেও না।
হয়তো কখনো চেয়েছি পাখির পাখার তলায় আমার নিটোল ঘুম। হয়তো কখনো চেয়েছি , পাখি আমার মুখে গুঁজে দেবে দু' এক দানা।
সূর্যাস্ত কী দেবে আমাকে?
সূর্যাস্ত একটি চরিত্র। আঁধারকে
ডেকে সন্ধ্যাতারাকে নিয়ে আসে।
সন্ধ্যাতারার সঙ্গে কথা বলে ভিখিরি মা।
আজ সারাদিন ভিক্ষে পেলেও
তার সন্তানের জন্য এক ফোঁটা
দুধ পায়নি।
সন্ধ্যাতারা হাসতে হাসতে আরো অনেক তারাকে ডেকে ঝরাতে বলবে------ আলো আলো দুধ।
এই সূর্যাস্ত বেলায় রাস্তার গাছ তলা থেকে উনুনের ধোঁয়া উঠছে। রান্না করবে পথের মানুষ।
রান্নার গন্ধ উঠবে আকাশে আকাশে।
এই সূর্যাস্ত বেলায় হাটুরেরাও ঘরে ফিরছে। সন্তানের মুখ চেয়ে। তাদের পুঁটলিতে বাঁধা আছে মন্ডা মিঠাই।
ঘরের দিকে যাওয়া।
সূর্যাস্তের আরেক অর্থ----------
ঘরের দিকে যাওয়া।
কোনো কোনো কবি
সূর্যাস্তে নির্মিত গৃহে নিজের অন্তর--আলো জ্বালিয়ে রচনা করেন নতুন এক ব্রহ্মাণ্ড।
সূর্যাস্তের চরিত্র পাল্টে পাল্টে যায়। একেক ঋতুতে একেক রকম। যা দেখার শখ, মাটির টিলার উপর দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখার শখ এ জীবনে শশীর মিটবেও না।
হয়তো বা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
শশীর হয়ে বলেছিলেন---------
ব্যথা মোর উঠবে জ্বলে ঊর্ধ্বপানে।
------১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯
------৩১----৫----২০২২
------নির্মল হালদার
ছবি : অভিজিৎ মাজী
আরও পড়ুন




















কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন